জুলাই-আগস্টের বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে শহীদ হওয়া ছাত্র-জনতার স্মৃতি সংরক্ষণের প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়িত হয়নি। আন্দোলনের বীরদের আত্মত্যাগ পাঠ্যপুস্তকে অন্তর্ভুক্ত না করায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন শহীদদের পরিবার ও সচেতন নাগরিকরা।

প্রথম থেকে চতুর্থ শ্রেণির কোনো বইয়ে জুলাই-আগস্টের অভ্যুত্থানের ইতিহাস উল্লেখ নেই। তৃতীয় শ্রেণির বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় বইয়ে ১৩টি অধ্যায় থাকলেও চব্বিশের আন্দোলন উপেক্ষিত। শুধু ভাষা আন্দোলন ও মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস যুক্ত করা হয়েছে।

শিক্ষাবিদরা বলছেন, তরুণ প্রজন্মকে আত্মত্যাগের সঠিক ইতিহাস জানানো প্রয়োজন। পাঠ্যপুস্তকে অভ্যুত্থানের ঘটনা অন্তর্ভুক্ত না করার কারণ জানতে চাইলে এনসিটিবির চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এ কে এম রিয়াজুল হাসান জানান, “প্রাথমিক শিক্ষার্থীরা এই ইতিহাস বুঝবে না।” তবে অভিভাবকরা এই যুক্তি প্রত্যাখ্যান করেছেন।

আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক উমামা ফাতেমা অভিযোগ করেন, “যারা পাঠ্যপুস্তকের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন, তারা পূর্ববর্তী সরকারের ফ্যাসিবাদের দোসর। এজন্য জুলাই-আগস্টের ইতিহাস অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি।”

সেপ্টেম্বর মাসে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একটি প্রস্তাবে জুলাই-আগস্টের অভ্যুত্থানের ইতিহাস অন্তর্ভুক্তির সুপারিশ করা হয়। তবে এনসিটিবির বিশেষজ্ঞ সদস্য সাজ্জাদুর রহমানের (রাখাল রাহা) আপত্তির কারণে এটি বাদ দেওয়া হয়।

সাবেক শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনির নিয়োগ দেওয়া কর্মকর্তাদের নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন অভিভাবকরা। তারা মনে করছেন, এনসিটিবি এখনও পুরনো সরকারের প্রভাবমুক্ত নয়।

জাতীয় শিক্ষাক্রমে ইতিহাস সংযোজনের অনাগ্রহ নিয়ে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শিক্ষা সংস্কারে আরও স্বচ্ছতা প্রয়োজন। শহীদদের স্মৃতি সংরক্ষণ এবং ইতিহাস সংযোজনের দাবিতে আরও কার্যকর উদ্যোগ নেওয়া উচিত।

শিক্ষামন্ত্রীর নির্দেশে প্রাথমিক স্তরের পাঠ্যপুস্তকের পুনর্বিবেচনার দাবি উঠেছে। জুলাই-আগস্টের ইতিহাস না থাকা শিক্ষাব্যবস্থায় গাফিলতির একটি বড় উদাহরণ বলে মনে করছেন অভিভাবক ও শিক্ষাবিদরা।